মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাল ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু, যা বলছে প্রধান দুই দল ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সহকারী কমিশনার বদলি বিএসএফের পোশাকে সীমান্তে মাদকের কারবার করতেন রেন্টু কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ ভারতে চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ ও কাশ্মিরে কেমন ভোট হলো বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা উচিত : মির্জা ফখরুল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখা বেআইনি : হাইকোর্ট আমার পুরো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল : মনোজ মানবদেহে প্রথম ব্রেইনচিপ ইমপ্লান্টে ধাক্কা খেলো নিউরালিংক ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ অধ্যাপক গ্রেপ্তার
শান্তর শতকে দারুণ জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

শান্তর শতকে দারুণ জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

স্বদেশ ডেস্ক:

রান একেবারে কম করেনি আয়ারল্যান্ড, বলা যায় পাহাড়সম একটা লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের দিকে। নানান নাটকীয়তা শেষে সেই পাহাড় ৩ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখেই টপকালো বাংলাদেশ। যেখানে দুঃসাহসিক এক অভিযাত্রীর ভূমিকা পালন করলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ক্যারিয়ার সেরা শতরানে ভর করে ৩২০ রানে লক্ষ্য পাড়ি দিয়েছে টাইগাররা।

শান্ত খারাপ সময় কাঁটিয়ে এসেছেন অনেকদিন আগেই, ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন ধারাবাহিকভাবেই। তবে একটা অপূর্ণতা থেকেই যাচ্ছিল। মাইলফলকের অভাবে বড় রানগুলোও স্বীকৃতিহীন থেকে যাচ্ছিল। অবশেষে সেই আক্ষেপ দূর হলো,
প্রথম ওয়ানডে শতক তুলে নিয়েছেন তিনি। মাত্র ৮৩ বলে ১১ চার আর ২ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত।

তবে মাঠে থেকে দলকে জেতাতে পারেননি শান্ত। যেই কাজটা করেছেন মুশফিকুর রহিম। ৪০তম ওভারে মিরাজ আউট হলে চক্ষু রাঙায় আইরিশরা। তবে ছয় নম্বরে নামা মুশফিক ঠিকই করে এসেছেন তার কাজটা। শেষ ওভারের উত্তেজনা ছাপিয়ে ঠান্ডা মাথায় তাইজুল ও শরিফুলকে সাথে নিয়ে নিশ্চিত করেন দলের জয়। ২৮ বলে ৩৬ করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

৩২০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় একটা ঝড়ো শুরুর প্রয়োজন ছিল টাইগারদের। তামিম ইকবাল ও লিটন দাস থেকে তেমনটাই আশা করেছিলেন সমর্থকরা। তবে হতাশ করেছে উদ্বোধনী জুটি, আর মাত্র ৯ রানেই শেষ হয় তাদের যাত্রা। পাওয়ার প্লের মাঝে ফেরেন লিটন দাসও।

তামিম ইকবাল আজও ভরসার প্রতিদান দিতে পারেননি, পারেননি ব্যর্থতার বেড়াজাল থেকে বের হতে। উদ্বোধনী জুটি ভেঙে ফিরেছেন দুই অংক ছোঁয়ার আগেই, ১৩ বলে ৭ রান করে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে সাথে নিয়ে দলের হাল ধরেন লিটন। দুজনই হাত খুলে খেলতে থাকেন সময়ের সাথে সাথে।

তবে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের প্রথম বলে ভুল করে ফেলেন লিটন। গ্রাহাম হিউমের বল ব্যাটে ছুয়ে লরকান টাকারের তালুবন্দী হয়। ২১ বলে ২১ করে থামতে হয় তাকে। একই পথে হেঁটেছেন সাকিব আল হাসানও, ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ২৭ বলে ২৬ রান করে আউট হয়েছেন দলকে বিপদে রেখে। অবশ্য এর আগে দলকে তিন অংকের ঘরে পৌঁছে দিয়ে যান তিনি।

নাজমুল হোসেন শান্তের সাথে মিলে সাকিব গড়ে তুলেছিলেন ৪৯ বলে ৬১ রানের জুটি। সাকিব ফিরলে তাওহীদ হৃদয় এসেছেন তার জায়গাতে। তাকে নিয়েই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন শান্ত, এরই মাঝে ৪৯ বলে তুলে নেন অর্ধশতকও। হৃদয়কে সাথে নিয়েই অবশ্য সেই অর্ধশতককে শতকে রূপ দেন তিনি। মাত্র ৮৩ বলে ১১ চার আর ২ ছক্কায় ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিন অংকের ঘরে পৌঁছান শান্ত।

এদিকে দারুণ ছন্দে থাকা তাওহীদ হৃদয়ও ধরে রেখেছেন ধারাবাহিকতা। ৪৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। এরপর আরো হাত খুলে খেলতে থাকেন এই তরুণ ব্যাটার। যদিও ৫৮ বলে ৬৮ করেই থামতে হয়েছে তাকে। তবে আউট হবার আগে শান্তের সাথে গড়ে তুলেছিলেন ১০২ বলে ১৩১ রানে জুটি। যেই জুটিই লড়াইয়ে রেখেছিল বাংলাদেশকে।

৩৭তম ওভারে ৯৩ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৭ রান করে শান্ত আউট হলে খানিকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দেখা দেয়। যদিও মুশফিক-মিরাজ জুটি তার অনেকটাই কাটিয়ে উঠেন। কিন্তু ১২ বলে ১৯ করে মিরাজ আউট হলে ফের চক্ষু রাঙায় আইরিশরা। তবে বাকি পথটা সামলে তাইজুল ও শরিফুলকে সাথে নিয়ে সামলে দেন মুশফিক।

শুক্রবার ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ডকে শুরুতেই চেপে ধরেছিল টাইগার বোলাররা। মাত্র ১৬ রানেই তুলে নেয় ২ উইকেট। দুটো উইকেটই যায় হাসান মাহমুদের ঝুলিতে। প্রথম ওভারেই দলীয় ১ রানে পল স্টার্লিংয়ের স্ট্যাম্প ভাঙেন হাসান মাহমুদ। কোনো রান আসেনি তার ব্যাটে।

পরের পাঁচ ওভারে আরো ১৫ রান যোগ করলে সপ্তম ওভারে ফের আঘাত হানেন হাসান। দ্বিতীয় শিকার আরেক ওপেনার স্টিফেন ডুহানি। ২১ বলে ১২ রান করা ডুহানিকে মিরাজের ক্যাচ বানান তিনি। এরপরেই দলের হাল ধরেন এন্ড্রি বালবির্নি ও হ্যারি টেক্টর। প্রথমে ধীরে শুরু করলেও এরপর দ্রুত গতিতে রান বাড়াতে থাকেন দুজনে।

দুজনেই ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ করতে থাকেন নিজেদের ইনিংস। ফলে শুরুর চাপ সামলে উঠে আয়ারল্যান্ড। ২০তম ওভারে এসে তাইজুল ইসলামকে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি তুলে নেন হ্যারি টেক্টর। পরের ওভারেই দলীয় সংগ্রহ ৩ অংক স্পর্শ করে৷ অর্থাৎ ১২-২১; এই ১০ ওভারে ৭০ রান যোগ হয় আয়ারল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে।

দু’জনের এই জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ফেরান আইরিশ অধিনায়ক এন্ড্রি বালবির্নিকে। ৫৭ বলে ৪২ রান আসে তার ব্যাটে। আউট হওয়ার আগে হ্যারি টেক্টরের সাথে গড়ে তুলেছিলেন মাত্র ১০৪ বলে ৯৮ রানের জুটি। এরপর লরকান টাকার ১৬ ও কার্টিস ক্যাম্ফার ৮ রান করে ফিরলেও গর্জে উঠেন জর্জে ডকরেল। এরই মাঝে ৯৩ বলে শতক তুলে নেন হ্যারি টেক্টর। ৩১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে যা তার চতুর্থ শতক।

এই জুটির কোনো জবাব ছিল না বাংলাদেশের কাছে। সাকিব থেকে শুরু করে এবাদত, কেউ ভয়ের কারণ হতে পারেননি টেক্টর-ডকরেলের কাছে। তাইজুল, শরিফুলরা তো রীতিমতো অসহায় ছিলেন তাদের সামনে। অবশেষে ৪২তম ওভারে এসে এই জুটি ভাঙেন এবাদত, ফেরান সেঞ্চুরিয়ান টেক্টরকে। তবে এর আগে ১১২ বলে ১৪০ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন তিনি।

টেক্টর ৭ চার আর ১০ ছক্কা হাঁকিয়ে আউট হলে ৭১ বলে ১১৫ রানের জুটি ভাঙে ডকরেলের সাথে। টেক্টরের অভাব অবশ্য বোধ করতে দেননি মার্ক অ্যাডায়ার। ডকরেলের সাথে ১৯ বলে ৩৭ রান যোগ করেন তিনি। ফলে তার দল নির্ধারিত ৪৫ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ৩১৯ রানের সংগ্রহ পায়। মার্ক ৮ বলে ২০ ও ডকরেল ৪৭ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।

হাসান মাহমুদ ৯ ওভারে ৪৮ রানে ২ উইকেট ও শরিফুল সমান ৯ ওভারে ৮৩ রানে নেন ২ উইকেট।৭ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে একটা উইকেট নেন তাইজুল। ৫৭ রান দিয়ে উইকেটবিহীন থাকেন সাকিব।

উল্লেখ্য, বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি হয় ৫ ওভার কম, অর্থাৎ ৪৫ ওভারের ছিল ম্যাচটি।

সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল। ফলে ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০তে।

১৪ মে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877